নিজস্ব প্রতিবেদক :
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় সরকারি সম্পত্তি দখল করে হাটের কয়েকশ’ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করে মার্কেট করছে পৌরসভা। এতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা জড়িত আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যবসায়ীদের পক্ষে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করলে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে মার্কেটের দোকান বরাদ্দের নামে চলছে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, গোপালপুরের কোনাবাড়ি হাটের পেরিফেরিভুক্ত ৭২১ দাগে পাঁচ শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন দোকান করছিলেন। এজন্য তারা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করেছেন। হঠাৎ পৌরসভা দোকানদারদের উচ্ছেদ করে সেখানে পাকা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ইতিমধ্যে হাটের এক অংশে দোকানদারদের উচ্ছেদ করে পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। অন্য অংশেও পাকা স্থাপনা নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে পাকা দোকান। একেক জনের কাজ থেকে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।
ব্যবসায়ী আবদুল মতিন বলেন, ‘৩০ বছর ধরে এহানে (এখানে) কাঁচামালের দোকান করছি। ইজারাদারগো খাজনাও দিছি। পাঁচ মাস আগে আমার ঘর তুইলা দেয়। পৌরসভার লোক কয়, এহানে তারা নতুন ঘর তুইলা ভাড়া দেবে।’ ব্যবসায়ী আবদুল আলী বলেন, ‘আমাগো ঘর তুইলা দিয়া তারা আবার পাকা কইরা ঘর দেবে। হেই ঘর ভাড়া নিতে ৫ লাখ ট্যাকা লাগবো। এত ট্যাকা দিমু কেমনে।’ হারুনুর রশিদ নামে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, হাটের ইজারাদারের সঙ্গে যোগসাজশে পৌরসভা এ কাজ করছে।
গোপালপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন জানান, তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৭ আগস্ট গোপালপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার সারমিন সুলতানা স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে পৌরসভার মেয়রকে পেরিফেরিভুক্ত সরকারি সম্পত্তিতে সরকারি অনুমোদনহীন নির্মাণাধীন দোকান ঘর ভেঙে ফেলার জন্য বলা হয়। পরের চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি গোপালপুরের ইউএনও মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেনও অবৈধ দোকানঘর ভেঙে ফেলার জন্য মেয়রকে লিখিত অনুরোধ করেন। কিন্তু এখনও সেসব দোকান ভাঙা হয়নি।
ইউএনও মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বলেন, দোকানগুলো ভেঙে ফেলার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদি সেগুলো ভাঙা না হয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গোপালপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম রুবেল জানান, আগে বিভিন্ন সময় পৌরসভার উদ্যোগে হাটের উন্নয়ন করা হয়েছে। এবারও ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়ন হিসেবে টিনশেড ঘর করা হয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে নিয়ম অনুযায়ী দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। দোকানগুলো ভেঙে ফেলাও হয়নি। দোকান বরাদ্দের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।